সিরাজগঞ্জের দূর্গম চরাঞ্চলে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আব্দুল কাদের নামে এক কৃষকের ৪ বিঘা জমির গম বিষ স্প্রে করে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। এতে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছেন ভুক্তভোগী কৃষিক। এ ঘটনায় ৫ জনকে বিবাদী করে থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে যমুনা বিধৌত সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কাওয়াকোলা ইউনিয়নের সয়াশেখা গ্রামের স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বড় কয়ড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে কৃষক আব্দুল কাদের ও তার ভাই সাইদুল ইসলামের নিজস্ব ৪ বিঘা জমিতে এ বছর গম বপন করেছিলেন। গমের চারা গজিয়ে এক থেকে দেড় ফুট দৈর্ঘ্যের গাছও হয়েছে। এ অবস্থায় গত রোববার দুপুর ১২টার দিকে বড়হর গ্রামের শফিউল ইসলাম ওরফে শফি, সাইফুল শেখ, সোহেল শেখ, সবুজ শেখ ও সয়াশেখা গ্রামের আব্দুল মালেক সংঘবদ্ধভাবে এসে প্রকাশ্যে গমক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করে। এ সময় বাঁধা দিলেও তারা কর্ণপাত করে না। বিষ প্রয়োগের ফলে পুরো ক্ষেতের গম ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী বৃদ্ধ মহির উদ্দিন, আল মাহমুদ, আকলিমা, হাসিবুল ইসলাম, আব্দুল মান্নানসহ অনেকেই বলেন, দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শফি গংরা এসে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে বিষ প্রয়োগ করে ক্ষেতে। ওই সময় বাড়ীতে পুরুষ লোকজন না থাকার সুযোগে তারা এমন কর্মকান্ড করেছে।
ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল কাদের ও সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা দুই ভাই নিজেদের কিছু জমি আর বর্গাচাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করি। ওই চারবিঘা জমিই আমাদের নিজস্ব সম্বল।পুরো ক্ষেত জুড়ে গম বুনেছিলাম। কিন্তু বিষ দিয়ে সব গমই মেরে ফেলা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই গমগুলো মাটিতে শুয়ে পড়বে। এতে অন্তত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে তারা দাবী করেন। তারা আরও বলেন, দু বছর আগে পাকা গম কেঁটে জমিতে স্তুপ করে রেখেছিলাম। সেই এই একই গ্রæপ গমের স্তুপে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। গত বছরও ক্ষেতের সরিষা পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা চলছে। বর্তমানে সিআইডি ওই মামলার তদন্ত করছে। মূলত আমাদের উপর অত্যাচার করে সরিয়ে দিয়ে জমিটা দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করছে শফিউল ইসলাম শফি গংরা।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বিষ প্রয়োগে গম নষ্টের ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী বলেন, বিষয়টি থানা থেকে ফোন করে আমাকে জানিয়েছে। আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে মিমাংসার উদ্যোগ নিয়েছি।
সিআইডির পরিদর্শক ওহেদুজ্জামান বলেন, গত বছরের সয়াশেখা চরের সরিষা ক্ষেত পুড়িয়ে দেয়ার একটি মামলা আমার হাতে রয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। খুব শীঘ্রই তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :