বাক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ উপজেলার আন্দারকোটা গ্রামের মোল্লাপাড়ার নিছার আলীর ছেলে মেহেদী হাসানের দিন পার হয় ঘরের বারান্দায় শুয়ে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আঘাত পেয়ে মাথায় একাধিক ক্ষতেরও সৃষ্টি হয়েছে। বিগত দিনে মেহেদীর হুইলচেয়ারের জন্য মায়ের আকুতির কথা প্রকাশ পায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
বুধবার দুপুরে মানবতার হাত বাড়িয়ে দেন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা। এসময় নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগীতায় হুইলচেয়ার ও প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়েন মেহেদী ও তার মা-বাবা।
জানা যায়, দাদার রেখে যাওয়া ৩ শতক জমিতে ছোট একটা ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করেন মেহেদী ও তার মা-বাবা। মাঠে কোনো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে জন হিসেবে কাজ করেন মেহেদীর বাবা। মাঠে প্রতিদিন কাজ না পাওয়ায় বন্য শাঁক ও বাড়ির পাশের মাঠে হওয়া তরকারী রান্না করেন মেহেদীর মা। মাসে একদিন মাছ কিনতে হাট-বাজারে যায় মেহেদীর বাবা।
আরোও জানা যায়, জন্মের পর মেহেদীকে স্বাভাবিক মনে হলেও পরবর্তীতে শারীরিকভাবে অসুস্থ বুঝতে পারেন মা-বাবা। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে সব কিছু বুঝে উঠার পরও চিকিৎসা করাতে পারেন না তারা। বাক ও শারীরিক অসুস্থ হওয়ার কারণে খাওয়া দাওয়া ও প্রকৃতির ডাকেও কিছু করতে পারেন না মেহেদী। উঠে দাড়ানোর চেষ্টায় বৃথা হয়ে পড়ে গিয়ে অনেক ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে মাথা ও শরীরে। হাঁটতে ও স্বাভাবিক ভাবে বসতে না পারায় মেহেদীর দিনের সময় কাটে বারান্দাতে শুয়ে।
হুইলচেয়ার পাওয়ার পর মেহেদীর মা বেগমজান বলেন, আমাদের ছেলে তামিম জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। আমাকে ছাড়া সে চলাফেরা করতে পারে না। আমি একটু বাইরের কাজে বা রান্না করতে গেলে একা হাঁটতে গিয়ে সে বেশ কয়েকবার মাথায় ফাটিয়ে ফেলেছে।
আমরা গরিব মানুষ, দুই বেলা খেতে পাই না। হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই, স্যার আমাদের হুইলচেয়ার দিয়েছে আরো উপহার দিয়েছে। আমরা খুব খুশি। স্যার যেনো অনেক দিন বেচেঁ থাকে। দোয়া করি আল্লাহ তাকে অনেক বড় করুক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, মেহেদীর অসুস্থতার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে আমি জানতে পারি। এমন অসহায় ও গরীব মানুষদের জন্য উপজেলা প্রশাষন সর্বদা সহযোগিতা করবে এবং সমাজের বিত্তবানদের কেও এগিয়ে আসার আহবান জানায়।
আপনার মতামত লিখুন :