রাজধানীর গুলশান থেকে এক কিশোরীকে অপহরণের পর প্রায় তিন বছর আটকে রেখে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (৭ জুলাই) রাতে রাজধানীর ভাটারা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (৮ জুলাই) এ তথ্য জানান র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে গুলশান থেকে অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরীকে স্কুলে যাওয়ার সময় মো. শাকিল (২২) অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত তার সহযোগীদের সহায়তায় ভুক্তভোগীকে আটকে রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রতিদিন জোরপূর্বক ৩-৪ বার ধর্ষণ করতেন এবং খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে রাখতেন। এছাড়া শাকিল সিগারেটের আগুন দিয়ে তার ডান হাতে ছেঁকা দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনও করতেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, সবশেষ ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি ওই কিশোরী কৌশলে পালিয়ে তার নিজ বাসায় চলে যান।পরবর্তীতে তার পরিবার মো. শাকিল ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলা করেন। আদালত তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
তিনি আরও জানান, এরপর ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পিবিআই তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণসহ ধর্ষণের সত্যতা পাওয়ায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারিক কার্যক্রম শেষে ঘটনার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ অভিযুক্ত শাকিল, তার বাবা বকুল মিয়া ও শাকিলের মা শিমু বেগমের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদানপূর্বক গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করেন।
এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর ভাটারার জোয়ার সাহারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মামলায় তারা তিন মাস জেল খাটার পর জামিনে বের হয়ে নিয়মিত হাজিরা না দিয়ে পলাতক ছিলেন।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব।
আপনার মতামত লিখুন :