AlokitoBangla
  • ঢাকা শুক্রবার, ০২ জুন, ২০২৩, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
banner

দেড় হাজার ছিনতাই ও অর্ধশত নারী নিপীড়নের হোতা শাকিলসহ চারজনকে গ্রেফতার


FavIcon
আলোকিত বাংলা,প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২, ০৮:৩৭ পিএম
দেড় হাজার ছিনতাই ও অর্ধশত নারী নিপীড়নের হোতা শাকিলসহ চারজনকে গ্রেফতার
দেড় হাজার ছিনতাই ও অর্ধশত নারী নিপীড়নের হোতা শাকিলসহ চারজনকে গ্রেফতার

শাকিল আহম্মেদ রুবেল পড়াশোনা করেছে মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত । এরপর কোনো কাজে স্থায়ী না হয়ে পেশা হিসাবে বেছে নেয় ছিনতাইয়ের মতো ভয়ংকর এক পথ। ব্যবহার করে ভুয়া পুলিশ পরিচয়। এভাবে একে একে দেড় হাজারের মতো ছিনতাই করেছে সে। তার টার্গেট বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী। নানা কৌশলে ছাত্রীদের নির্জন স্থানে নিয়ে নিপীড়ন করার পর ছিনিয়ে নেয় নগদ অর্থ, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী। তার হাতে অন্তত অর্ধশত নারী ছিনতাই ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। নিপীড়নের শিকার হওয়ায় ভুক্তভোগীদের অনেকে আইনের আশ্রয় নিতে কুণ্ঠাবোধ করেন। এতে দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে শাকিল। সর্বশেষ রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মোটরসাইকেলে তুলে দিয়াবাড়িতে নিয়ে খারাপ আচরণ করে। তার কাছে থাকা সবকিছু ছিনতাই করে। শনিবারের ওই ঘটনার মূলহোতা শাকিলসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সম্মেলনে ভিন্নধর্মী দুর্ধর্ষ এই ছিনতাইকারীর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিবির প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গ্রেফতার হওয়া বাকি তিনজন হলো-মো. আকাশ শেখ, দেলোয়ার হোসেন ও মো. হাবিবুর রহমান। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি ওয়্যারলেস সেট, দুটি পুলিশ স্টিকারযুক্ত মোটরসাইকেল ও ছিনতাই করা ছয়টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

ডিবি জানায়, ছিনতাইয়ের মূলহোতা শাকিল আহম্মেদ রুবেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে। সে যেখানে যেত সেখানেই বিয়ে করত। এখন পর্যন্ত তার ৩-৪টি বিয়ের বিষয়ে জানা গেছে তবে তার স্থায়ী ঠিকানার বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত গাজীপুরসহ তার তিনটি ঠিকানা পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে ডিবির টিম তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে।

ডিবি প্রধান বলেন, ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ছিনতাইয়ের আগে শাকিল ১২ আগস্ট উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে। সেই মোটরসাইকেলে ‘পুলিশ’ স্টিকার লাগিয়ে ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে। শাকিল ঢাকায় কোনো বাসা ভাড়া নেয়নি। রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া নিয়ে অবস্থান করত। তার হাতে ওয়াকিটকি, পিস্তল ও গাড়িতে পুলিশের স্টিকার দেখে ঢাবি ছাত্রী তাকে পুলিশ বলে ভেবে নেন। এরপর দিয়াবাড়িতে নিয়ে ছুরির ভয় দেখিয়ে ছাত্রীর গলার চেন, কানের দুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাগজপত্র নিয়ে যায়।

হারুন অর রশীদ বলেন, শাকিল মোটরসাইকেলে পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে ওয়্যারলেস সেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের টার্গেট করে। একাকী পেয়ে কাছে অবৈধ মাদক আছে বলে টার্গেটকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নির্জন কোথাও নিয়ে যায়। এরপর দামি জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় ও অশালীন আচরণ করে। এটা তার পেশা ও নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক্ষ্য বাস্তবায়নে সে বেছে নেয় রাজধানীর ৩০০ ফিট, দিয়াবাড়ি ও পূর্বাচলের মতো এলাকাকে। শাকিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছিনতাইয়ের ছয়টি মামলা রয়েছে। সে একাধিকবার জেল খেটেছে। আর গ্রেফতারকৃত বাকি তিনজন শাকিলকে ছিনতাইয়ের কাজে সহায়তা করে আসছিল।তিনি আরও বলেন, আমরা অনুরোধ করব, কেউ পুলিশ পরিচয় দিলে যেন তার মোটরসাইকেলে কেউ না ওঠেন। তাকে যেন চ্যালেঞ্জ করেন এবং তার পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। কোনো পুলিশ মোটরসাইকেল করে কখনো আসামি নিয়ে যায় না। তাহলে শাকিলের মতো মানুষকে আটকানো যাবে।

ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী শফিকুল আলম যুগান্তরকে বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। শাকিলের কাছ থেকে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে সে প্রচুর মিথ্যা বলছে। ঠিকানা ও অতীত কর্মকাণ্ড নিয়েও সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। শাকিলসহ গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

 

Banner
Side banner
Side banner