বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারাগারে ডিভিশন (প্রথম শ্রেণির বন্দী মর্যাদা) দেয়া হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ অনুযায়ী দুই নেতাকে ডিভিশন দেয়া হয়নি বলে মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম ও মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের করা রিটের শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার হাইকোর্টকে জানিয়েছেন তাদের আজ মঙ্গলবার ডিভিশন দেয়া হয়েছে।
তবে মির্জা ফখরুলের ও মির্জা আব্বাসের আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ডিভিশন দেয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে নিশ্চিত করার আবেদন জানান। এরপর শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামীকাল বুধবার এ বিষয়ে আদেশের জন্য রেখেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। সাথে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো: আক্তারুজ্জামান, মোরশেদ আল মামুন লিটন, মো: কামাল হোসেন, মো: সগীর হোসেন লিওন, মনিরুজ্জামান আসাদ, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান মিলন, মো: মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আদেশের পর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী আজ তাদের ডিভিশন দেয়া হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে লিখিত চেয়েছি। তখন আদালত বুধবার বেলা ১২টায় এ বিষয়ে আদেশের জন্য রেখেছেন।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস উভয়ই সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য। ডিভিশন উনাদের প্রাপ্য। আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও কারাকর্তৃপক্ষ তাদের ডিভিশন দেয়নি। কারাগারে ডিভিশন পাওয়া উনাদের আইনগত অধিকার থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তাদের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার খর্ব করে ডিভিশন দেয়নি। তাই মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের স্ত্রীদ্বয় পৃথক দুটি রিট করেছেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, গত ৯ ডিসেম্বর তাদের ডিভিশন দিতে বলেছেন আদালত। সে অনুসারে ১৩ ডিসেম্বর তাদের ডিভিশন দেয়া হয়েছে। সেটার নথি আদালতকে দিয়েছি। এখন এ রিট আর চলতে পারে না।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে তাদের নিজ নিজ বাসভবন থেকে তুলে নেয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর ডিবির কার্যালয় থেকে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয়। পরদিন ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ নেতাকর্মীর জামিন আবেদনের শুনানি শেষে তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
এরআগে গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার দেখানো হয়। একই মামলায় গত ৮ ডিসেম্বর দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীসহ ৪৩৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
কারাগারে পাঠানো বিএনপি নেতাদের মধ্যে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ ৪৩৪ জন।
তবে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
আপনার মতামত লিখুন :