সিরাজগঞ্জে গৃহবধূ স্বর্না(২২) কে হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি ধামাচাঁপা দিতে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের নিকট দৌড়ঝাপ শুরু করার অভিযোগ উঠেছে।
স্বর্নার অকাল মৃত্যুর সঠিক বিচার পাবে কি না তা নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে সংশয় দেখা দিয়েছে।
মেয়ে হারা পরিবার ন্যায় বিচার পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্বর্নাকে হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের দ্বার উন্মোচন হচ্ছে।নিহতের পরিবার জানান, স্বর্নার বিয়ে দেবার সময় চার ভরি স্বর্নের গহনা দেবার কথা ছিল। কিন্তু ছেলের বাবা রফিকুল ইসলাম গহনার পরিবর্তনে নগদ টাকার দাবী করে। নগদ টাকা দিতে অস্বীকার করলে শশুর রফিকুল ইসলাম ছেলের বউ ও তার বাবার উপর শোকে ক্ষোভে ভরে উঠেন। তখন থেকে বউয়ের উপর মানষিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন অর্থলোভী শশুর। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) শহিদুল ফকির মেয়ের শশুর বাড়ি বহুলীতে দুধের পিঠা খাওয়ানোর জন্য দাওয়াত দিতে যান বিয়াই বাড়ি। বিয়াই রফিকুল ইসলাম দাওয়াতী অতিরিক্ত লোকজনের কথা বললে বিয়াই শহিদুল ফকিরের সাথে কথা কাটাকাটি শুরুর এক পর্যায়ে রফিকুল ইসলাম শহিদুল ফকিরকে মার উদ্যত হয়।
এসময় স্বর্নার বাবাকে মারপিটের উদ্যতের সময় মেয়ে এগিয়ে যান এবং শ্বশুড়কে বাধা দিলে তখন ছেলের বাবা স্বর্নাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে। অবস্থা বেগতিক দেখে শহিদুল ফকির বিয়াইয়ের অসৎ আচরনে মনের ক্ষোভে শোকে বিয়াই বাড়ি থেকে চলে আসেন। এই ঘটনার জের ধরে পরের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মিলে স্বর্নাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সুকৌশলে শাসরোধ করে। শাসরোধের সময় স্বর্নার সাথে ধস্তাধস্তি হয়।এক পর্যায়ে হত্যা করে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার অপপ্রচার করা হয়।
নিহতের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করেন। ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়।
(৭ জানুয়ারী) বিকেলে নিহতের লাশ দাফনের জন্য গোসল করানোর সময় স্বর্নার গলার নিচের অংশে ক্ষত ও বুকে নখের আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় মোছা: শাহীনুর বেগম(৩৫),মোছা: সাথী খাতুন(৪০) ও জোসনা খাতুন(৪২)। তারা বলেন - স্বর্না আত্মহত্যার করলে ওই চিহ্ন গুলো থাকতো না। স্বর্নাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার অপপ্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, গৃহবধূ স্বর্না খাতুন ছিলেন শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোন প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল না। দুজনের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। কিন্তু স্বর্নার শশুর রফিকুল ইসলাম ছিলেন একজন বদমেজাজী ও নিষ্ঠুর স্বভাবের পুরুষ। পাষান্ড শশুর গহনার নগদ টাকা না পাওয়া ও দুই বিয়াইয়ের কোন্দলের কারনে স্বর্নাকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
ময়না তদন্তের সঠিক রিপোর্ট দাখিলপুর্বক দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবী জানান নিহতের পরিবারসহ স্থানীয়রা।
আপনার মতামত লিখুন :